সমীকরণটা খুব জটিল ছিল না। তবে ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ—তিনটি দলই ছিল দোলাচলে। যদিও ম্যাচ শুরুর আগে পয়েন্ট তালিকায় একবার চোখ বুলালে যে কেউ বলতেন, নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার দৌড়ে ‘বি’ গ্রুপ থেকে ইংল্যান্ডই এগিয়ে।
আসলেই তাই। প্রথম ৩ ম্যাচের ৩টিতেই জেতা ইংল্যান্ডই ছিল ‘বি’ গ্রুপের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে। নিজেদের শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাতে পারলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই সেমিফাইনালে উঠতেন ইংলিশ মেয়েরা। এমনকি ছোট ব্যবধানে হারলেও টানা সপ্তমবারের মতো টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শেষ চারে খেলা নিশ্চিত হতো।
কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচটা জিতে নিল ৬ উইকেট আর ১২ বল বাকি রেখে। তাতে নেট রান রেটে বেশ খানিকটা পিছিয়ে পড়ল ইংল্যান্ড। ‘বি’ গ্রুপের পয়েন্ট তালিকার তিনে নেমে গিয়ে আসর থেকেই ছিটকে পড়ল হিদার নাইটের দল। আর ওয়েস্ট গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ও দক্ষিণ আফ্রিকা গ্রুপ রানার্স আপ হয়ে নাম লেখাল সেমিফাইনালে। সর্বশেষ ২০১০ আসরে গ্রুপ পর্ব থেকে নিয়েছিল ইংল্যান্ড।
১৪ বছর পর ইংল্যান্ডের গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে পড়ার বড় কারণ বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশেকে হেসেখেলে হারিয়ে দিয়েও ইংল্যান্ডকে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে। নিগার–রিতুদের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে ইংলিশ মেয়েরা করেন ১১৮ রান, যা ছিল তাঁদের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম। বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে বাংলাদেশকে ৯৭ রানে আটকে রাখতে পারলেও তা ইংলিশ মেয়েদের নেট রান রেটে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে।
সেমিফাইনালে মুখোমুখি
১ম সেমিফাইনাল | অস্ট্রেলিয়া–দক্ষিণ আফ্রিকা | ১৭ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার | দুবাই |
২য় সেমিফাইনাল | ওয়েস্ট ইন্ডিজ–নিউজিল্যান্ড | ১৮ অক্টোবর, শুক্রবার | শারজা |
দুবাইয়ে কাল টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রান তুলেছিল ইংল্যান্ড। লক্ষ্য ছুঁতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিন্দুমাত্র বেগ পেতে হয়নি। ক্যারিবীয় মেয়েদের এই জয়কে চমক বলা হচ্ছে কারণ এবারের নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটাই সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়। আগের সর্বোচ্চ ছিল ইংল্যান্ডের, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১২৫ রান তাড়া করে জিতেছিল তারা।
দুবাইয়ে কাল টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রান তুলেছিল ইংল্যান্ড। লক্ষ্য ছুঁতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিন্দুমাত্র বেগ পেতে হয়নি। ক্যারিবীয় মেয়েদের এই জয়কে চমক বলা হচ্ছে কারণ এবারের নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটাই সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়। আগের সর্বোচ্চ ছিল ইংল্যান্ডের, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১২৫ রান তাড়া করে জিতেছিল তারা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই জয়ের ভিতটা গড়ে দিয়েছেন অধিনায়ক হেইলি ম্যাথুস এবং আরেক ওপেনার কিয়ানা জোসেফ। তাঁদের উদ্বোধনী জুটি ১০২ রানের। দুজনই তুলে নেন ফিফটি।
জোসেফের কথা আলাদা করে বলতেই হয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ নারী দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় স্টেফানি টেলর চোটে পড়ায় সুযোগ পান জোসেফ। এর আগে আটটি ইনিংসে ব্যাট করলেও ছিল না কোনো ফিফটি। স্ট্রাইক রেটও ছিল ১০০–এর নিচে। সেই জোসেফ এ ম্যাচে ওপেনিংয়ে নেমে ১৩৬.৮৪ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৫২ রান। মেরেছেন ৬টি চার ও ২টি ছক্কা।
‘বি’ গ্রুপের পয়েন্ট তালিকা
দল | ম্যাচ | জয় | হার | পয়েন্ট | নেট রানরেট |
---|---|---|---|---|---|
ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ৪ | ৩ | ১ | ৬ | +১.৫৩৬ |
দক্ষিণ আফ্রিকা | ৪ | ৩ | ১ | ৬ | +১.৩৮২ |
ইংল্যান্ড | ৪ | ৩ | ১ | ৬ | +১.০৯১ |
বাংলাদেশ | ৪ | ১ | ৩ | ২ | –০.৮৪৪ |
স্কটল্যান্ড | ৪ | ০ | ৪ | ০ | –৩.১২৯ |
জোসেফ ও ম্যাথুসের বড় জুটির পর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এ জুটি ভাঙার পর দ্রুত আরও ৩টি উইকেট হারালেও তা ৬ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সেমিফাইনালে নাম লেখানো থেকে আটকাতে পারেনি।
তবে ম্যাচ শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেমিফাইনাল আর ইংল্যান্ডের বিদায় নিশ্চিত হলেও স্বস্তির খবরটা আগেই পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়া মেয়েদের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় করতে হলে ইংল্যান্ডকে ১৩৪ রানের কমে বেঁধে ফেলতে হতো ওয়েস্ট ইন্ডিজের। কিন্তু ইংল্যান্ড ১৪১ রান করে ফেলায় ম্যাচের মাঝপথেই দক্ষিণ আফ্রিকার সেমিফাইনালে ওঠা নিশ্চিত হয়। লরা উলভার্ট–সুনে লুসরা সেই সময় দুবাইয়েরই আরেক মাঠে অনুশীলন করছিলেন। সুখবর পেয়েই তাঁরা উল্লাস করতে শুরু করেন।
বৃহস্পতিবার দুবাইয়ে প্রথম সেমিফাইনালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে দক্ষিণ আফ্রিকা। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বশেষ আসরের ফাইনালে অ্যালিসা হিলি–এলিস পেরিদের কাছেই হেরেছিলেন প্রোটিয়া মেয়েরা।
শুক্রবার শারজায় দ্বিতীয় সেমিফাইনালে লড়বে ওয়েস্ট ইন্ডিজ–নিউজিল্যান্ড।