দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ইতিহাসে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বড় জয়। এমন ম্যাচের পর লিওনেল স্কালোনির স্বাভাবিকভাবেই খুশি হওয়ার কথা। বলিভিয়াকে ৬-০ গোলে হারানোর পর সন্তুষ্টিই প্রকাশ করলেন আর্জেন্টিনা কোচ। সবচেয়ে বেশি প্রশংসা করেছেন ৫ গোলে সরাসরি অবদান রাখা লিওনেল মেসির।
হ্যাটট্রিক করার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়ে দুটি গোলও করিয়েছেন ৩৭ বছর বয়সী মেসি। সংবাদ সম্মেলনে তাঁকে নিয়ে স্কালোনি বলেছেন, ‘মেসি আপনাকে বিস্মিত করেই যাবে। (ম্যাচের) একপর্যায়ে আমি (ডাগআউটে) বসে পাবলোকে (আইমার) বলেছি, চমৎকার ব্যাপার। সে যত দিন পারে খেলুক—তার কাছে আমার চাওয়া শুধু এটাই। কারণ, এটা আনন্দময় অনুভূতি।’
আর্জেন্টিনার কোচ হিসেবে এটা ছিল স্কালোনির ৮১তম ম্যাচ। গিয়ের্মো স্তাবিলের ১২৭ ম্যাচের আর্জেন্টাইন কোচিংয়ের রেকর্ড ছুঁতে স্কালোনিকে আরও অনেক দূর যেতে হবে। তবে আপাতত স্কালোনির এই ছয় বছর মেয়াদে আর্জেন্টিনা যেন সোনালি সময় পার করছে। বিশ্বকাপ, কোপা আমেরিকাসহ চারটি শিরোপা জয়ের পথে এই ৮১ ম্যাচে ৫৭টি জয় পেয়েছেন স্কালোনি। তাঁর অধীন আর্জেন্টিনা ড্র করেছে ১৭ বার, হেরেছে মাত্র ৭ ম্যাচ। এ সময় ১৬৫ গোল করার বিপরীতে ৪৩ গোল হজম করেছে আর্জেন্টিনা।
স্কালোনিকে অবশ্য এসব পরিসংখ্যান টানে না। বলিভিয়ার বিপক্ষে দল যেভাবে খেলেছে, আর্জেন্টিনা কোচ তাতেই খুশি, ‘আমরা নিজেদের স্বকীয়তা বজায় রেখে জিতেছি। এই চেতনাটা কখনো হারাইনি। আমরা ভালো একটি ম্যাচ খেলেছি এবং দর্শকেরাও তৃপ্তি নিয়ে ফিরেছে।’
ফুটবল–বিশ্বের এই দলের প্রশংসা করার অর্থ হলো খেলোয়াড়েরা সম্মানটুকু অর্জন করেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, এটি একটি প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে হয়েছে।
লিওনেল স্কালোনি, আর্জেন্টিনা কোচ
এই ম্যাচ দিয়ে আর্জেন্টিনার জার্সিতে অভিষেক হলো ইতালিয়ান ক্লাব কোমোর ২০ বছর বয়সী অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার নিকো পাজের। লাওতারো মার্তিনেজের বদলি হিসেবে ৭৩ মিনিটে মাঠে নামেন পাজ। তাঁর বাবা সাবেক সেন্টারব্যাক পাবলো পাজ ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৮ সালের মধ্যে আর্জেন্টিনার হয়ে ১৪ ম্যাচ খেলেছেন। আর্জেন্টিনার ক্লাব নিওয়েলস ওল্ড বয়েজে স্কালোনির সতীর্থও ছিলেন পাবলো। সেই স্মৃতি স্মরণ করে স্কালোনি বলেছেন, ‘আমি তার বাবার সঙ্গে খেলেছি এবং সে ছেলের অভিষেকে খুশি হবে। সে ভালো খেলে বলেই এ পর্যন্ত এসেছে। ধীরে ধীরে সে আমাদের আরও সাহায্য করবে।’
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ দল আর্জেন্টিনা। স্কালোনি ২০১৮ সালে কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর ধীরে ধীরে এই ছয় বছরে বিশ্ব ফুটবলে অন্য রকম অবস্থান গড়েছে আর্জেন্টিনা দল। ২০২২ বিশ্বকাপ জয়ের আগে ও পরে জিতেছে কোপা আমেরিকা। এ ছাড়া জিতেছে ফিনালিসিমাও। আর্জেন্টিনা মাঠে নামলে চোখ থাকে পুরো ফুটবল–বিশ্বেরই।
এ বিষয়ে স্কালোনি বলেছেন, ‘ফুটবল–বিশ্বের এই দলের প্রশংসা করার অর্থ হলো খেলোয়াড়েরা সম্মানটুকু অর্জন করেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, এটি একটি প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে হয়েছে।’